বলাৎকারের অভিযোগে ইমামকে গণপিটুনির পর মৃত্যু

গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানাধীন ৩৯নং ওয়ার্ড হায়দরাবাদ এলাকায় বলাৎকারের অভিযোগে গণপিটুনির শিকার ইমাম রইজ উদ্দিন অসুস্থ হয়ে কারাগারে মারা গেছেন।
সোমবার সকালে জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের মসজিদ ইমাম রইজ উদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চাঁদপুর মতলব থানার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে মৃত ইমাম রইজ উদ্দিন(৩৫) । তিনি হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি গাজীপুর মহানগরীর ঝাজড় এলাকায় জমি কিনে বাড়ি করে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
মৃত রইজ উদ্দিনের স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, মসজিদে দুইটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। মৃত রইজ উদ্দিন ছিলেন সুন্নি এবং যার মাধ্যমে ওই মসজিদে নিয়োগ হয় সেও সুন্নি কিন্তু ওই এলাকার অধিকাংশ মানুষ আহলে হাদিস অনুসারী। তাই এক পক্ষ মৃত রইজ উদ্দিন এর ওয়াজ পছন্দ করতেন না এ ব্যাপারে চক্রান্ত করে মারধর করা হয়েছে ।
পূবাইল থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মো: আমিরুল ইসলাম জানান, ছেলে, শিশু ও কিশোরদের ধর্ষণের অভিযোগে রবিবার সকালে স্থানীয়রা হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব রইজ উদ্দিনকে আটক করে গাছে বেঁধে গণপিটুনি দেয়। এসময় এলাকাবাসী তার গলায় জুতার মালা দিয়ে ব্যাপক মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ইমাম রইজ উদ্দিনকে এলাকাবাসীর কাছ থেকে উদ্ধার করে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শেষে থানায় নিয়ে আসে, পরে নির্যাতিত এক কিশোরের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে ২৭ এপ্রিল গাজীপুর কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
পরবর্তীতে ২৮এপ্রিল রাত ৩টার দিকে তিনি কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তারপর মরদেহ ওই হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার রফিকুল কাদের জানান, রইজ উদ্দিনের রাত ৩টার দিকে কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণের এডিসি মোঃ শাকিল আহমেদ জানান মৃত রইজুদ্দিনের স্ত্রী সাজেদা বাদী হয়ে পূবাইল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন । তদন্ত সাপেক্ষে অতি দ্রুতগতিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।