বরগুনায় জোড়া খুন।। ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় একজনের ফাঁসি।। ২০ বছরের সাজা

বরগুনায় এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টাকালে দুই শিশু সন্তান বাধা দেওয়ায় তাদের হত্যা করার অভিযোগে মোঃ ইলিয়াচ পহলান (৩৪) নামে এক আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি আসামী মোঃ ইলিয়াচ পহলানকে দুই ধাপে ১০ বছর করে ২০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
আজ রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এর বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এর রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রঞ্জু আরা শিপু।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ০৪ আগস্ট বরগুনা সদর উপজেলার পূর্ব গুদিঘাটা এলাকার ভিকটিমের বসত ঘরে আসামি ইলিয়াচ পহলান ভিকটিম এর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করার চেষ্ট করিলে রাত্র অনুমান ১.২০ মিনিট হইতে একই তারিখ রাত্র অনুমান ৪.০০ ঘটিকার মধ্যে যে কোন সময় আসামী মোঃ ইলিয়াস পহলান (৩৪), ভিকটিমের বসত ঘরে কৌশলে প্রবেশ করিয়া যৌন কামনা চরিতার্থ করার নিমিত্তে ভিকটিম কে বাপটাইয়া ধরলে সে ডাকচিৎকার দিয়ে জোরালো বাধার সৃষ্টি করে। তখন বসত ঘুমে থাকা তাইফা (৩) ও হাফিজুল (১০) এর ঘুম ভেঙে গেলে তারাও ডাকচিৎকার করতে থাকে ।আসামী ইলিয়াস উত্তেজিত হয়ে বসত ঘরে থাকা বাংলা দাও দিয়ে সকলকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি ভাবে কোপায়। হাফিজুল (১০) এর মাথায় ও খাঁড়ে এবং হাতের কজিতে একাধিক কোপ দিয়ে হত্যা করে। ভিকটিম রিগান (৩০) এর মাথায় ও ঘাড়ে একাধিক এবং তাইফা (৩) এর মাথায়, গালে ও হাতে একাধিক কোপ দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিম রিগান ও তাইফা (৩) কে মুমুর্ষ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন অটোরিক্সা যোগে বরগুনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে বরগুনা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বরিশাল রেফার্ড করে। বরিশালে যাওয়ার পথে তাইফা (৩) মারা যায়। ভিকটিম মুমূর্ষু অবস্থায় সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীনকালে এসআই(নি:) মনিরুজ্জামানের কাছে পুরো ঘটনাটার বর্ননা দেন।
তৎপ্রেক্ষিতে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মোঃ ইলিয়াস পহলান (৩৪), কে গ্রেফতার করে। তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনাল সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষে আসামি মোঃ ইলয়াচ পহলানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেন। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানারও আদেশ দেন আদালত। এছাড়াও ভিকটিমকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ এবং কোপানোর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১০ বছর করে আরো ২০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। নিহত শিশু তাইফা ভিকটিম মেয়ে,অন্য শিশুটি তার নিকটাত্মীয়। ইলিয়াস বরগুনা সদর উপজেলার পূর্ব কেওড়াবুনিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট রঞ্জু আরা শিপু, আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব স্বপন প্রমুখ।