টিএসসিতে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি প্রদর্শনীর নিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ছাত্রশিবিরের গণ-অভ্যুত্থানের প্রদর্শনীতে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীর নাম ও ছবি প্রদর্শনীর নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল সাবেক শিক্ষার্থী। আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ২৮ জন শিক্ষার্থী গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে নিন্দা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি, গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ও যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন “ইসলামী ছাত্রশিবির” আয়োজিত “৩৬ জুলাই: আমরা থামব না” শীর্ষক একটি কর্মসূচিতে বাঙালি জাতির মহানায়ক ৭ বীরশ্রেষ্ঠকে ব্যঙ্গ করে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ৭ শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর ছবি ও নাম প্রদর্শিত হয়েছে।আমরা মনে করি, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্বিচার গণহত্যা, নারী ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত, দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি ও নাম প্রদর্শনী জাতির সেই আত্মত্যাগ ও মুক্তিযুদ্ধের অবমাননার শামিল এবং সীমাহীন ধৃষ্টতা।’এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ ধরনের তৎপরতার বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে এবং তা ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আমাদের মুক্তিসংগ্রামের বীজ রোপিত হয়েছে। এর প্রতিটি ধূলিকণা আমাদের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের স্মৃতি বহন করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বোমা বর্ষণ, নির্বিচার গুলি চালিয়ে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারী হত্যা করে। ১৪ ডিসেম্বর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রায় ৩০০ জন শহীদ হন।’
বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের অস্তিত্বের ঠিকানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব ও মর্যাদা এবং আমাদের পূর্বপুরুষের আত্মত্যাগ, অবদান ও অর্জনকে কোনোভাবেই আপনারা অপমানিত হতে দেবেন না। এই মহান দায়িত্ব আপনাদেরই পালন করতে হবে।’ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিবৃতিতে সই করেছেন সৈয়দ বদরুল আহসান, নীরু কামরুন নাহার, ওমর সেলিম, এ বি এম নাসির, আবু নাসের, মোহাম্মদ মাহমুদ হাসান, শামীম আহমেদ, সুলতানা রহমান, হারুন আল রশিদ, অপর্ণা পাল, শাকিলুর রহমান, সরদার ফারুক, আবদুল্লাহ আল ইমরান, কে এম মাসুদ আলী, ফকরুল ইসলাম চৌধুরী, খালেদ আহম্মেদ, আবদুল কাদের, মোহাম্মদ চৌধুরী, আহম্মেদ হোসেন, রিয়াজ আহমেদ, আসমা হক, সোহানা আমিন, মাসুদুল ইসলাম, আলী নুর, সাইদুল ইসলাম, দেবরাজ দেব, মেহেরুন নাহার ও সানজিদা আনোয়ার।