বরগুনায় মুসলিম তরুণীকে অপহরণ করে ধর্ষণঃ তিন হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

এক হিন্দু ছেলে নিজের নাম ও ধর্ম গোপন করে এক মুসলিম তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে ধর্ষণ করে শাখা সিঁদুর পড়িয়ে দেওয়ায় ওই তরুণী রবিবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তিনজনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করে। ট্রাইবুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লাইলাতুল ফেরদৌস মামলাটি গ্রহণ করে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামীরা হলেন, বরগুনার আমতলী উপজেলার কড়ইতলা হাড়িপাড়া গ্রামের উত্তম পাইকের ছেলে দিপু পাইক, তার বন্ধু গৌতম পাইক ও বিমল হাওলাদার। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পিপি রঞ্জুয়ারা শিপু।
জানা যায়, আমতলীর এক তরুণী দিপু পাইকের সঙ্গে মুঠোফোনে পরিচয় হয়। এ সময় দিপু পাইক নিজেকে অনিক হিসেবে পরিচয় দেয়। তরুণীটি একটি মুসলিম পরিবারের সন্তান। দু’জনের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেম চলে। অনিক ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তরুনী পারিবারিকভাবে বিয়ে বসতে রাজি হয়। অনিক তরুণীর প্রস্তাব নাকচ করে নিজেরা বিয়ে করতে চায়। তরুণী কথিত অনিকের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এতে অনিক ক্ষুব্ধ হয়।
গত ১ ফেব্রুয়ারী সকাল অনুমান ৯ টার সময় ওই তরুনী আমতলীর কড়াইবুনিয়া গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে কাচা রাস্তায় গেলে ওই তিন যুবক একটি অটো (মাহেন্দ্র) গাড়িতে জোরপূর্বক অপহরণ করে প্রথমে বরিশাল নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকা হেমায়েতপুর নিয়ে যায়। আসামী দিপু পাইক তার বন্ধুদের সহায়তা ১ ফেব্রুয়ারি হতে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাধিক বার জোর করে ধর্ষণ করে।
তরুণী বলেন, দিপু পাইক আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে বিরক্ত করিত। আমি নিষেধ করলেও দিপু বার বার ম্যাসেজ দিত। আমি আস্তে আস্তে দিপুর প্রতি দুর্বল হয়ে যাই। দিপু পাইক নাম গোপন করে অনিক এবং মুসলিম বলে প্রকাশ করে। দিপু আমাকে বিভিন্ন প্রকার মিথ্যা প্রলোভন দেখাতে থাকে। আমি পারিবারিকভাবে বিয়ের কথা বলায় দিপু রাজি হয়নি। দিপু চাচ্ছে আমরা গোপনে বিয়ে করি। আমি দিপুর প্রস্তাবে রাজি হইনি। এতে দিপু ক্ষিপ্ত হয়ে তার বন্ধুদের নিয়ে জোরপূর্বক আমাকে অপহরণ করে ৬ দিন ধর্ষণ করে। আমি পরে জানতে পারি দিপু পাইক হিন্দু। তার অনিক নাম নয়। একজন হিন্দু ছেলে মুসলমান নাম ধারণ করে আমাকে ধর্ষণ করেছে।
তরুণী আরও বলেন, দিপুর দুই বন্ধুর সহায়তায় জোরপূর্বক খুনের ভয় দেখিয়ে আমার মাথায় সিঁদুর ও হাতে শাখা পড়িয়ে দেয়। দিপু যতবার ধর্ষন করেছে ততবার ভিডিও ও স্থীর চিত্র করে রেখেছে। আমি সুযোগ পেয়ে আমার চাচাতো বোনকে জানাই। পরে তারা এসে আমাকে উদ্ধার করে। দিপুর ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আরিফ হোসেন বলেন, আমি এখন পর্যন্ত আদালতের আদেশ পাইনি। আদেশ পেলে আসামীদের গ্রেফতার করার চেস্টা করব।