মাগুরায় ছাত্রদল নেতা সোহেলের বিরুদ্ধে অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মুন্সী সোহেলের বিরুদ্ধে এক শিক্ষককে অপহরণ ও জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক ফয়জুর রহমান ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার আবাইপুর রামসুন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি এই ঘটনায় ১৮ এপ্রিল ২০২৫ মাগুরার শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন মামলাটির নম্বর -১২।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মুন্সী সোহেলের সঙ্গে ছাত্রদলের আরও কয়েকজন নেতাকর্মী এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত। অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন সোহেলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আলামিন, রাজ্জাক, শুকুর ও লিপ্টন। অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৭ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে সোহেলের নির্দেশে আলামিন ও রাজ্জাক শিক্ষক ফয়জুর রহমানের স্ত্রী শামীম লাকনুর কাছ থেকে নগদ ১ লাখ টাকা এবং ২ লাখ টাকার একটি চেক আদায় করেন।। পরবর্তীতে তারা সেই অর্থ মুন্সী সোহেলের হাতে তুলে দেন।
অন্যদিকে, ভুক্তভোগী শিক্ষক ফয়জুর রহমান বলেন, “মুন্সী সোহেল ও তার সহযোগীরা আগেও আমার এলাকায় চাঁদাবাজি করেছিলেন। আমি তখন বিষয়টি বিএনপির উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানালে তারা আমার উপর ক্ষীপ্ত হয়, পরে আমাকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে । চাঁদা না দিলে এলাকায় থাকতে পারবেন না বলেও হুমকি দেয় তারা।”
তিনি আরও বলেন, “এ ঘটনার জের ধরেই গত ৭ এপ্রিল সোমবার বিকালে আমাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে তাদের অফিসে জিম্মি করে রাখে এবং মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে।তখন আমার জীবন বাঁচাতে আমার স্ত্রী বাধ্য হয়ে তাদেরকে নগদ এক লক্ষ টাকা দেয়। পরে আমি মুক্ত হয়ে থানায় মামলা করেছি এবং এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা কামনা করছি।”
এই ঘটনার সাথে জড়িত নিজেকে বিএনপি কর্মী দাবি করে রাজ্জাক বলেন একটি মেয়ে গঠিত ঘটনা থেকে নিজেকে বাঁচাতে শিক্ষক ফয়জুর রহমান আমাদেরকে ৩ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হয়। আমরা কোন চাঁদাবাজি করিনি উনি আমাদেরকে এমনি দিতে চেয়েছেন। টাকা আমি নিয়েছি। এভাবে টাকা নিতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন এটা আমাদের অন্যায় হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শ্রীপুর থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মুন্সী সোহেল বলেন, অপহরণ ও চাঁদাবাজির ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য একটা পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
বিসয়টি নিয়ে থানায় জানতে চাইলে চাইলে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইদ্রিস আলী বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন । তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশেষ করে শিক্ষক সমাজসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মহল দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন শিক্ষক বলেন ছাত্রদলের আহবায়ক হয়ে এ ধরনের কাজ আমরা মোটেও কামনা করি না।আশাকরি বিষয়টি বিএনপির জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ তদন্ত সাপেক্ষে জরুরি ভাবে ব্যবস্হা গ্রহন করবেন।