০১:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫

১ জন কর্মকর্তা দিয়ে চলছে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস : ভোগান্তিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

শামীম আহমেদ জয়

মতলব উত্তর উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস চলছে মাত্র একজন কর্মকর্তার ওপর নির্ভর করে। ফলে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক, চিকিৎসক, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

অফিসটিতে মোট ৭টি পদে কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কেবল একজন অডিটর মো. কামাল হোসেন কর্মরত রয়েছেন। জনবল সংকটের কারণে তার ওপর পড়েছে অতিরিক্ত কাজের চাপ। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিয়াউল হক, সপ্তাহে তিনি ১দিন অফিসে উপস্থিত থাকেন।

জনবল কাঠামো অনুযায়ী, অফিসটিতে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ১ জন, সুপার ১ জন, অডিটর ২ জন, জুনিয়র অডিটর ১ জন, টাইপিস্ট ১ জন এবং অফিস সহায়ক ১ জন থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে একমাত্র কর্মরত ব্যক্তি হলেন অডিটর মো. কামাল হোসেন।
অতিরিক্ত কাজের চাপ মোকাবিলায় দৈনিক মজুরিভিত্তিতে উম্মে সানজিদা আক্তার নামে একজনকে সহায়তা করতে রাখা হয়েছে। তবে এটি পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন সুবিধাভোগীরা।সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণকারী শিক্ষক আব্দুল গাফফার মাষ্টার বলেন, “একটা সনদ নিতে এসে বারবার ঘুরতে হচ্ছে। একজন কর্মকর্তার পক্ষে এত কাজ সামলানো সম্ভব নয়।”

মিনুয়ারা বেগম ও খাদিজা আক্তার নামে ২স্কুল শিক্ষক জানান, “উম্মে সানজিদা নিয়মিত এ অফিসে আসেন, খুব আন্তরিকভাবে কাজ করেন। কোনো কিছু জানতে চাইলে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেন। একজন নারী হিসেবে তিনি যে নিষ্ঠা ও ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করছেন, তা প্রশংসার যোগ্য।”
দৈনিক মজুরিভিত্তিতে নিয়োজিত উম্মে সানজিদা আক্তার বলেন, “আমি চেষ্টা করছি অফিসের কাজ যথাসম্ভব দ্রুত ও সঠিকভাবে করতে। সাধারণ মানুষ যেন অপেক্ষা না করে সেবা পায়, সে দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছি। তবে জনবল বাড়লে সেবার মান আরও ভালো হতো।”
অডিটর মো. কামাল হোসেন বলেন, “অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। অনেক সময় একসঙ্গে একাধিক কাজ করতে গিয়ে সময়মতো সব সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। এরপরও আমি চেষ্টা করছি আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে।”

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, “আমি হাজীগঞ্জ, মতলব দক্ষিণ ও মতলব উত্তর—এই তিনটি উপজেলার দায়িত্বে আছি। একসঙ্গে তিনটি উপজেলার দায়িত্ব পালন কিছুটা কষ্টসাধ্য হলেও সরকারের দেওয়া দায়িত্ব যথাসাধ্য আন্তরিকতা নিয়ে পালন করছি। জনবল সংকট নিরসনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, “জনবল সংকটের বিষয়টি আমি অবগত আছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দ্রুত পদগুলো পূরণের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

জনবল সংকটের কারণে জনগণ সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এই দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

আপডেট: ০২:৪৮:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
২৮

১ জন কর্মকর্তা দিয়ে চলছে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস : ভোগান্তিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

আপডেট: ০২:৪৮:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

মতলব উত্তর উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস চলছে মাত্র একজন কর্মকর্তার ওপর নির্ভর করে। ফলে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক, চিকিৎসক, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

অফিসটিতে মোট ৭টি পদে কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কেবল একজন অডিটর মো. কামাল হোসেন কর্মরত রয়েছেন। জনবল সংকটের কারণে তার ওপর পড়েছে অতিরিক্ত কাজের চাপ। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিয়াউল হক, সপ্তাহে তিনি ১দিন অফিসে উপস্থিত থাকেন।

জনবল কাঠামো অনুযায়ী, অফিসটিতে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ১ জন, সুপার ১ জন, অডিটর ২ জন, জুনিয়র অডিটর ১ জন, টাইপিস্ট ১ জন এবং অফিস সহায়ক ১ জন থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে একমাত্র কর্মরত ব্যক্তি হলেন অডিটর মো. কামাল হোসেন।
অতিরিক্ত কাজের চাপ মোকাবিলায় দৈনিক মজুরিভিত্তিতে উম্মে সানজিদা আক্তার নামে একজনকে সহায়তা করতে রাখা হয়েছে। তবে এটি পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন সুবিধাভোগীরা।সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণকারী শিক্ষক আব্দুল গাফফার মাষ্টার বলেন, “একটা সনদ নিতে এসে বারবার ঘুরতে হচ্ছে। একজন কর্মকর্তার পক্ষে এত কাজ সামলানো সম্ভব নয়।”

মিনুয়ারা বেগম ও খাদিজা আক্তার নামে ২স্কুল শিক্ষক জানান, “উম্মে সানজিদা নিয়মিত এ অফিসে আসেন, খুব আন্তরিকভাবে কাজ করেন। কোনো কিছু জানতে চাইলে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেন। একজন নারী হিসেবে তিনি যে নিষ্ঠা ও ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করছেন, তা প্রশংসার যোগ্য।”
দৈনিক মজুরিভিত্তিতে নিয়োজিত উম্মে সানজিদা আক্তার বলেন, “আমি চেষ্টা করছি অফিসের কাজ যথাসম্ভব দ্রুত ও সঠিকভাবে করতে। সাধারণ মানুষ যেন অপেক্ষা না করে সেবা পায়, সে দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছি। তবে জনবল বাড়লে সেবার মান আরও ভালো হতো।”
অডিটর মো. কামাল হোসেন বলেন, “অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। অনেক সময় একসঙ্গে একাধিক কাজ করতে গিয়ে সময়মতো সব সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। এরপরও আমি চেষ্টা করছি আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে।”

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, “আমি হাজীগঞ্জ, মতলব দক্ষিণ ও মতলব উত্তর—এই তিনটি উপজেলার দায়িত্বে আছি। একসঙ্গে তিনটি উপজেলার দায়িত্ব পালন কিছুটা কষ্টসাধ্য হলেও সরকারের দেওয়া দায়িত্ব যথাসাধ্য আন্তরিকতা নিয়ে পালন করছি। জনবল সংকট নিরসনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, “জনবল সংকটের বিষয়টি আমি অবগত আছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দ্রুত পদগুলো পূরণের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

জনবল সংকটের কারণে জনগণ সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এই দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।