এক কৃষি কর্মকর্তা বিক্রি করলেন সার; ফিরিয়ে আনলেন আরেক কর্মকর্তা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারের প্রণোদনার আড়াই মেট্রিক টন রাসায়নিক সার বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে ওই সার দোকান থেকে ফিরে এনেছেন সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার মহাডাঙ্গা এলাকার একটি দোকান ও বাড়ি থেকে ওই সারগুলো ফেরত নেওয়া হয়। স্থানীয়দের ভাষ্য, ওই দোকান ও বাড়ি একই ব্যক্তির।
পরে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুনাইন বিন জামান সার কেলেঙ্কারির এই তথ্য জানান।
কৃষি অফিসের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের খরিপ-১ মৌসুমের প্রণোদনার অংশ হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সাড়ে ছয় হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে সার-বীজ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। তালিকাভুক্ত প্রত্যেক কৃষককে পাঁচ কেজি করে ধান বীজ, ১০ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি ডিএপি সার দেওয়া হচ্ছে। একেক দিন একেক ইউনিয়নের কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে এসব সার-বীজ।
উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের কৃষকদের বিতরণের আড়াই মেট্রিক টন সার বেচে দেন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাকিব উদ্দীন। ওই সার কেনেন মহাডাঙ্গা এলাকার সার ব্যবসায়ী সাইফুল ট্রেডার্সের মালিক সাইফুল ইসলাম।
বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার সন্ধ্যায় মহাডাঙ্গা এলাকার সাইফুল ট্রেডার্স ও অন্য একটি বাড়ি থেকে সারগুলো জব্দ করা হয়।
সারের ক্রেতা সাইফুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রাকিব বলেন, ওই কর্মকর্তা পূর্ব পরিচিত। তিনি সার বিক্রির জন্য যোগাযোগ করেন। আমরা প্রথমে কিছু না বুঝেই সারগুলো কিনি। কিন্তু পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোকানে এসে তা ফিরিয়ে নিয়ে যান।
তার ভাষ্য, সারগুলো প্রণোদনার, এটা আগে ওই কৃষি কর্মকর্তা বলেননি। এটা জানলে সেগুলো কিনতাম না। তবে একজন কৃষি কর্মকর্তা কোথা থেকে সার বিক্রি করছেন এমন প্রশ্ন করা হলো তা এড়িয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাকিব উদ্দীনকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।
কৃষি উদ্যোক্তা ও আমচাষী গোলাম মোস্তফা সুমন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে সারের আবস্থা ভয়াবহ। নগদ টাকা দিয়েও ন্যায্যমূল্যের সার মিলছেনা। এ নিয়ে বিস্তর অভিযোগের মধ্যে এ ধরনের কাজ গ্রহণযোগ্য নয়।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুনাইন বিন জামান জানান, উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহের পর নিরপেক্ষ বিতরণকারীর উপস্থিতিতে সার বিতরণ করা হয়। কিন্তু অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তা সই জাল করে সারগুলো নিয়েছিলেন। উদ্ধারের পর সেগুলো কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।