১০:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

বরগুনায় চলছে লোকনাট্য সমারোহ

মোঃ শাহজালাল

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে বরগুনায় চলছে লোকনাট্য সমারোহ। মনোমুগ্ধকর সব পরিবেশনা দেখতে ভিড় করছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা নানা বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুরা। এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে সব ধরনের অপসংস্কৃতি দূর হবে বলে মনে করছেন বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও দর্শকরা।

জেলা প্রশাসন এবং নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের সহযোগিতায় জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির আয়োজনে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বরগুনা পৌরসভার সদর রোড এলাকার টাউনহল প্রাঙ্গণে এ লোকনাট্য সমারোহ অনুষ্ঠান চলে।

তিন দিনব্যাপী এ আয়োজনের মধ্যে হয়লাগন, জারিগান, পালাগান, কবিতা আবৃত্তি, পুথি পাঠসহ থাকবে আরও নানা ধরনের স্থানীয় পরিবেশনা। প্রতিদিন এসব পরিবেশনা দেখতে বরগুনার টাউনহল প্রাঙ্গণে ভিড় করছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা নানা বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুরা। বিশেষ করে গ্রামীণ পর্যায়ে হারাতে বসা বিভিন্ন লোকসংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে শিশুদের নিয়ে ছুটে আসছেন অভিভাবকরা। আধুনিকতার ছোঁয়ায় অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে বিভিন্ন সময় এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই বলেও জানান তারা।

লোকনাট্য দেখতে এসে ফৌজিয়া তাসনীন আনিকা বলেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের মাঝে আমাদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য প্রকাশ পাবে। বর্তমানে তারুণ্যের মাঝে আধুনিকতা অনেক বেশি জড়িয়ে গেছে। যার ফলে আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য বলতে গেলে আমরা ভুলতে বসেছি। আমরাসহ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে ভুলে না যেতে এ ধরনের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মীর রিজন মাহমুদ নিলয় নামে আরেক দর্শক বলেন, লোকনাট্য উৎসবটি আমাদের সমাজ থেকে প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। তারুণ্যের উৎসবের মাধ্যমে লোকনাট্যসহ বিভিন্ন পরিবেশনায় আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা গ্রাম বাংলার আবহমানকাল ধরে চলে আসা সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারব।

কেন্দ্রীয় খেলাঘর কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য চিত্তরঞ্জন শীল বলেন, লোকসংস্কৃতির মধ্যে মানুষের প্রাণের স্পন্দন থাকলেও বর্তমানে আমরা এর চর্চা করছি না। সাধারণ মানুষের এমন অনুষ্ঠানগুলোর বেশি করে চর্চা করা উচিত। আমাদের যাত্রা হারিয়ে যাচ্ছে, জারিগান হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় বরগুনায় লোকসংস্কৃতির চর্চা ছিল, বর্তমান সরকার আবার এ সব অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে এবং সাধারণ মানুষ এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। আমরা বিশ্বাস করি লোকসংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত থাকলে মোবাইল সংস্কৃতিসহ অপসংস্কৃতি বন্ধ হবে। মানুষে মানুষে হানাহানি বন্ধ হয়ে যাবে।

বরগুনা জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির কালচারাল অফিসার তানজিলা আক্তার তমা বলেন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সব সময় নানা ধরনের আয়োজন করে থাকে। এরই অংশ হিসেবে বরগুনায় শুরু হয়েছে লোকনাট্য সমারোহ। আমাদের গ্রামীণ পর্যায়ে প্রায় বিলীন হয়ে যাওয়া সংস্কৃতিগুলো মানুষের মাঝে ফিরিয়ে আনতে এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

আপডেট: ০৫:২৭:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
১০০

বরগুনায় চলছে লোকনাট্য সমারোহ

আপডেট: ০৫:২৭:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে বরগুনায় চলছে লোকনাট্য সমারোহ। মনোমুগ্ধকর সব পরিবেশনা দেখতে ভিড় করছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা নানা বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুরা। এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে সব ধরনের অপসংস্কৃতি দূর হবে বলে মনে করছেন বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও দর্শকরা।

জেলা প্রশাসন এবং নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের সহযোগিতায় জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির আয়োজনে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বরগুনা পৌরসভার সদর রোড এলাকার টাউনহল প্রাঙ্গণে এ লোকনাট্য সমারোহ অনুষ্ঠান চলে।

তিন দিনব্যাপী এ আয়োজনের মধ্যে হয়লাগন, জারিগান, পালাগান, কবিতা আবৃত্তি, পুথি পাঠসহ থাকবে আরও নানা ধরনের স্থানীয় পরিবেশনা। প্রতিদিন এসব পরিবেশনা দেখতে বরগুনার টাউনহল প্রাঙ্গণে ভিড় করছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা নানা বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুরা। বিশেষ করে গ্রামীণ পর্যায়ে হারাতে বসা বিভিন্ন লোকসংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে শিশুদের নিয়ে ছুটে আসছেন অভিভাবকরা। আধুনিকতার ছোঁয়ায় অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে বিভিন্ন সময় এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই বলেও জানান তারা।

লোকনাট্য দেখতে এসে ফৌজিয়া তাসনীন আনিকা বলেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের মাঝে আমাদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য প্রকাশ পাবে। বর্তমানে তারুণ্যের মাঝে আধুনিকতা অনেক বেশি জড়িয়ে গেছে। যার ফলে আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য বলতে গেলে আমরা ভুলতে বসেছি। আমরাসহ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে ভুলে না যেতে এ ধরনের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মীর রিজন মাহমুদ নিলয় নামে আরেক দর্শক বলেন, লোকনাট্য উৎসবটি আমাদের সমাজ থেকে প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। তারুণ্যের উৎসবের মাধ্যমে লোকনাট্যসহ বিভিন্ন পরিবেশনায় আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা গ্রাম বাংলার আবহমানকাল ধরে চলে আসা সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারব।

কেন্দ্রীয় খেলাঘর কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য চিত্তরঞ্জন শীল বলেন, লোকসংস্কৃতির মধ্যে মানুষের প্রাণের স্পন্দন থাকলেও বর্তমানে আমরা এর চর্চা করছি না। সাধারণ মানুষের এমন অনুষ্ঠানগুলোর বেশি করে চর্চা করা উচিত। আমাদের যাত্রা হারিয়ে যাচ্ছে, জারিগান হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় বরগুনায় লোকসংস্কৃতির চর্চা ছিল, বর্তমান সরকার আবার এ সব অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে এবং সাধারণ মানুষ এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। আমরা বিশ্বাস করি লোকসংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত থাকলে মোবাইল সংস্কৃতিসহ অপসংস্কৃতি বন্ধ হবে। মানুষে মানুষে হানাহানি বন্ধ হয়ে যাবে।

বরগুনা জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির কালচারাল অফিসার তানজিলা আক্তার তমা বলেন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সব সময় নানা ধরনের আয়োজন করে থাকে। এরই অংশ হিসেবে বরগুনায় শুরু হয়েছে লোকনাট্য সমারোহ। আমাদের গ্রামীণ পর্যায়ে প্রায় বিলীন হয়ে যাওয়া সংস্কৃতিগুলো মানুষের মাঝে ফিরিয়ে আনতে এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।