নীলফামারীর সৈয়দপুরের একজন শিল্পপতির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে বাধা দেয়া ও মালামাল লুট করা হয়েছে। মিথ্যে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে বখাটেদের সংঘবদ্ধ করে এক যুবক এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় মানববন্ধন করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।
সোমবার (৫ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২ টায় সৈয়দপুর বিসিক শিল্প নগরীতে নিজ প্রতিষ্ঠানের চেম্বারে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ তুলে ধরেছেন ভুক্তভোগী শিল্পপতি মেসার্স গাউসিয়া মেজর অটোমেটিক ফ্লাওয়ার মিলস এর স্বত্বাধিকারী মো. মোস্তফা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সহ সভাপতি ও বর্তমান সদস্য এবং সৈয়দপুর বিসিক শিল্প নগরীর মালিক সমিতির সহ সভাপতি। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে সুনামের সাথে বৈধভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছি। আজ কোন ধরনের অন্যায় ও অবৈধ কাজ করিনি।
অথচ আজ আমাকে ভূমিদস্যু হিসেবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনী ও ষড়যন্ত্রমুলক। এতে আমার সম্মানহানী ঘটেছে এবং বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। একারণে প্রকৃত ঘটনা মিডিয়ার প্রকাশ করা জরুরী হয়ে পড়েছে। শহরের নতুন বাবুপাড়া পৌরসভা সড়কে আমাদের বহুতল ভবনের পিছনে ২০০৮ সালে ৭ শতক জমি কবলা দলিলমূলে আমার ছেলে সারফারজের নামে কিনে নিয়ে ভোগদখল করে আসছি।
জায়গাটি ডোবা প্রকৃতির ছিল। মাটি ভরাট করার পরও বিশেষ প্রয়োজন না হওয়ায় খোলামেলা অবস্থায় ছিল। একারণে এলাকার ছেলেরা এখানে খেলাধূলা করতো। সম্প্রতি দরকার হওয়ায় পৌরসভা থেকে নকশা অনুমোদন করে স্থাপনা নির্মাণের জন্য টিন দিয়ে ঘিরে নেই। গত ২৩ এপ্রিল সকাল ১১ টায় ইট, বালু, সিমেন্ট নিয়ে সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু করি।
এমন সময় এলাকার হাজী আফতাব আলম জোবায়ের এমাদীর ছেলে মুবাশ্বির প্রিন্স এমাদী কতিপয় বখাটেকে নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে কর্মচারীদের মারপিট করে কাজ বন্ধ করে দেয় এবং টিনের বেড়া ভাঙ্চুর করে সব মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সমঝোতার উদ্যোগ নিলেও প্রিন্স তা অগ্রাহ্য করে বিকেলে মানববন্ধনের নামে প্রোপাগাণ্ডায় মেতে উঠে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে যে ওই জায়গা সরকারি ও রোটারী ক্লাবের দখলে এবং খেলার মাঠ। আমি ব্যাংক ডিফোল্ডার হওয়ায় ঋণ পরিশোধের জন্য জায়গাটি দখংল করেছি।
এই মানববন্ধনের ভিডিও ফুটেজ প্রিন্স নিজ ফেসবুক একাউন্টসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করেছে। এমনকি অতীতের একটা ছবি এডিট করে সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুরের সাথে সংয সংযুক্ত করেও পোস্ট করেছে। যাতে আমাকে আওয়ামী ৃদোসর হিসেবে প্রমাণ করা যায়। অথচ ওই ছবির মূল চিত্র হলো প্রিন্সের বাবা হাজী আফতাব আলম জোবায়ের এমাদীর নেতৃত্বেই মন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে এবং সেখানে ফুলের তোড়াটি তাঁর হাতই ছিল। আমি শুধু পাশে দাঁড়ানো ছিলাম চেম্বারের সদস্য হিসেবে।
এখন প্রশ্ন হলো, জমিটি সরকারি হলে আমার ছেলের নামে দলিল, খাজনা, খারিজ কিভাবে হয়েছে এবং ১০ বছর আগে ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছি? পৌর ভূমি অফিস ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কি কোন কিছুই দেখেনি? আর যদি সরকারিই হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবেন। প্রিন্সকে কে দায়িত্ব দিয়েছে? কোন অধিকারে সে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এবং অপপ্রচার করছে? তাঁর এহেন দূর্বৃত্তপনা কার স্বার্থে? মূলত: রোটারি ক্লাবের নামে প্রিন্স নিজে সরকারি জমি দখল করার পায়তারা করছে। কেননা রোটারী ক্লাবও বরাদ্দ না নিয়েই ভবন ও জমি দখল করে রেখেছে।
এব্যাপারে মোবাশ্বির প্রিন্স এমাদীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ওই জায়গা সরকারি এবং রোটারি ক্লাবের আয়ত্তে। মো. মোস্তফা যে জায়গা দখল করেছিল তা মূলতঃ খেলার মাঠ। জন্মের পর থেকেই আমরা এখানে খেলাধূলা করি। এটা যদি তার জমি হতো তাহলে এতোদিন বলেননি কেন? মূলত ভূয়া কাগজ তৈরি তিনি ওই জায়গাটি নিজের দাবী করে ব্যাংকের খেলাপী ঋণের বিনিময়ে বুঝিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে। আমরা এলাকাবাসী তাঁর এমন অপতৎপরতা প্রতিহত করেছি মাত্র। কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা হয়নি। খেলার মাঠ উদ্ধার করা হয়েছে।