টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীরা। রাস্তা-ঘাটে ছাত্রীদের কু-প্রস্তাব, ইভটিজিং ও যৌন হায়রানিসহ নানা অপকর্মে মেতেছে উঠতি বয়সী এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। প্রতিবাদ করলে প্রাণনাশের হুমকি ও মারধর শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সম্প্রতি উপজেলার গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ইভটিজিং ও যৌন হয়রানির শিকার হয়ে প্রতিবাদে ভূঞাপুর-যমুনা সেতু আঞ্চলিক মহাসড়কের স্কুল রোডে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় কয়েকজন কিশোর গ্যাং সদস্যের নামে ভূঞাপুর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়। তারআগে কিশোর গ্যাংয়ের অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় মারধর ও হামলার শিকার হয়েছেন ভূঞাপুর পৌরসভার ঘাটান্দি গ্রামের আবুল হোসেন তালুকদারের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার নামে এক প্রবাসী। একই সঙ্গে তার টাকা ছিনতায়ের চেষ্টা করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এবং তাকে মারধর করে আহত করা হয়।
জানা যায়, উপজেলা পৌর শহরের ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরপাড়ে সকাল থেকে মধ্যেরাত পর্যন্ত চলে কিশোর গ্যাংয়ের অবাধে নিরাপদ আড্ডা। এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী স্কুল ও কলেজের ছাত্রীদের কু-প্রস্তাব, ইভটিজিং ও যৌন হায়রানি করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর ভূঞাপুর থানা পুলিশের টহল তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি। এতে করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এনিয়ে উপজেলার সচেতন নাগরিকসহ সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে কিশোর গ্যাং রোধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থী তাহমিনা খাতুন, বিথী, সুমাইয়া বলেন- পুকুরপাড়ের এই রাস্তা দিয়ে আমরা প্রায়ই চলাচল করে থাকি। সেসময় বখাটে কিশোর গ্যাং আমাদের কু-প্রস্তাব, ইভটিজিং ও যৌন হয়রানি করে। প্রতিবাদ করলে নানা হুমকি দেয়।
তাদের ভয়ে কিছু বলতে পারি না। কিশোর গ্যাংয়ে এখন অতিষ্ঠ। ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শাহরিয়া হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের পুকুরপাড়ে আমার বাসা ও মার্কেট। কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতের কারণে শিক্ষার্থীরা এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে সাহস পান না।
অভিভাবককে সাথে নিয়ে আসলেও তাদের সামনেই অশালীন আচরণ করে। এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান উল্লাহ্ বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতের খবরে আমি নিজেও পুকুরপাড়ে গিয়েছি।
পুলিশের টহল অব্যাহত আছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুনুর রহমান বলেন, কিশোর গ্যাংদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ও প্রয়োজনে মোবাইল কোট করা হবে।
মোহাম্মদ সোহেল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: